পাহাড় আর নদী একাকার যেখানে..

পাহাড় আর নদী একাকার যেখানে

যাদু কাটা নদী   ছবি: তোফাজ্জল হোসেন

নদীর নাম যাদুকাটা। গায়ে কাটা দেওয়ার মতোই যাদুকরি তার রূপ। নদী থেকে দেখা যায় দূরের পাহাড়, যাওয়া যায় না কাছে। কারণ পাহাড়গুলো ভারত সীমান্তের ওপারে। পাহাড়ের রূপ কাছে টানে, জড়িয়ে ধরতে চায় মায়ার বাঁধনে। সীমান্তের বাঁধা মানতে না চাওয়া মনকে এপারে আটকে রাখা কঠিন হয়ে পড়ে।
যাদু কাটা নদী   ছবি: তোফাজ্জল হোসেন

পাহাড়ের পর পাহাড় সবুজ থেকে ধীরে ধীরে ঝাপসা নীল রঙ ধারণ করে। অপরূপ স্বচ্ছ পানিতে নিজের মুখ দেখে দূরের আকাশ। তার প্রতিবিম্ব বুকে ধারণ করে যাদুকাটা কখনো সাজে রূপালী রঙে, কখনো সাজে অমোঘ নীলে আর কখনো গম্ভীর ধূসরবর্ণে।

যাদু কাটা নদী   ছবি: তোফাজ্জল হোসেন

একদা এই যাদুকাটা নদীতীরেই ছিল প্রাচীন লাউড় রাজ্যের রাজধানী। এখন রাজ্য নেই, নেই রাজধানীও। তবে যাদুকাটা নদীর উৎসমুখ, নদীর চারপাশের নয়নাভিরাম প্রাকৃতিক সৌন্দর্য অবশ্যই মুগ্ধ হওয়ার মতো। এলাকার নামের সঙ্গে রাজ্যের নামটিও জড়িয়ে আছে, ‘লাউরেরগড়’।

যাদু কাটা নদী   ছবি: তোফাজ্জল হোসেন

যাদুকাটার নদীর কোল ঘেষে বারিক টিলার অবস্থান। সবুজ বনে ছাওয়া এই চমৎকার টিলায় ঘুরে ঘুরে নদী দেখার আনন্দই আলাদা। বারেক টিলায় আদিবাসীদের একটি গ্রাম আছে। নাম আনন্দনগর। নদীর তীরঘেঁষে পূর্ব-উত্তর পার্শ্বে অবস্থিত ৩৬০ আউলিয়ার অন্যতম সফরসঙ্গী হযরত শাহ আরেফিন (রঃ) এর আস্তানা। নান্দনিক সৌন্দর্য্যে ঘেরা প্রাকৃতিক পরিবেশে প্রতিদিনই বিকালে পরিবার পরিজন নিয়ে সময় কাটাতে আসেন অনেকে। আর পূর্ব-দক্ষিণ পাশে অবস্থিত হিন্দু ধর্মের প্রাণ পুরুষ শ্রী অদ্বৈত প্রভুর জন্মধাম, প্রার্থণালয় ও তীর্থ স্থান।

যাদু কাটা নদী   ছবি: তোফাজ্জল হোসেন

এ নদীকে ঘিরে রয়েছে ৭৫০ বছরের প্রাচীন ইতিহাস। ইচ্ছে পূরণের উদ্দেশ্যে প্রতি বছর দোল পূর্ণিমার ত্রয়োদশীতে লক্ষাধিক হিন্দু ধর্মালম্বীদের সমাগম ঘটে যাদুকাটায়। নির্দিষ্ট তিথিতে গোসল করে নিজেকে কলুষমুক্ত মনে করেন তারা।
অপূর্ব সুন্দর মায়াবী নদী আর তাকে ঘিরে থাকা চমৎকার প্রাকৃতিক বৈভবকে দেখতে সেখানে ছুটে যায় অসংখ্য সৌন্দর্য পিয়াসি মন। আসতে পারেন আপনিও।
যাদু কাটা নদী   ছবি: তোফাজ্জল হোসেন
যাদু কাটা নদী   ছবি: তোফাজ্জল হোসেন

যাদু কাটা নদী   ছবি: তোফাজ্জল হোসেন

Comments

Popular posts from this blog

বিষন্ন গাছ বা দুঃখের বৃক্ষ বা শিউলি

জারুল

মায়াবতী কাঠগোলাপ